January 26, 2025
নারী হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে দুই কারারক্ষীকে বদলি

নারী হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে দুই কারারক্ষীকে বদলি

Read Time:6 Minute, 0 Second

গাইবান্ধা জেলা কারাগারে একজন নারী হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে প্রধান কারারক্ষিসহ দুইজন কারারক্ষীকে বদলি করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর কারা উপ-মহাপরিদর্শক মোঃ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক এ অফিস আদেশ দওেয়া হয়।

বদলি দুইজন হলেন জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী মোঃ আশরাফুল ইসলাম ও কারারক্ষী মোছাঃ সাবানা বেগম।
আদেশে মোঃ আশরাফুল ইসলামকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে এবং মোছাঃ সাবানা বেগমকে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে বদলি করা হয়েছে। তাদের বদলি হওয়া কারাগারে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার নারী হাজতির নাম মোছাঃ মোর্শেদা খাতুন সীমা। তিনি দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার চৌপুকুরিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে। তিনি গোবিন্দগঞ্জ থানার মাদক মামলার আসামি। সীমা প্রায় ৫ বছর ধরে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে বন্দী।

গত মঙ্গলবার নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরে হাজতি সীমার উন্নত চিকিৎসা ও নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীর মা করিমন নেছা।

অভিযুক্তরা হলেন গাইবান্ধা জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী (সুবেদার) মোঃ আশরাফুল ইসলাম, নারী কয়েদি মোছাঃ মেঘলা খাতুন, রেহেনা ও আলেফা, কারারক্ষী তহমিনা এবং সাবানা, সিআইডি আনিছ ও হাবিলদার মোস্তফা।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ‌‘হাজতি মোর্শেদা খাতুন সীমা একটি মামলায় (হাজতি নং-৫০৮) প্রায় ৫ বছর থেকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে বন্দী। কিছুদিন আগে কারাগারে কর্মরত সুবেদার মোছাঃ আশরাফুল ইসলাম ও নারী কয়েদি (রাইটার) মোছাঃ মেঘলা খাতুনের মধ্যে চলমান অবৈধ কার্যকলাপ দেখে ফেলেন নারী হাজতি সীমা।;’

‘বিষয়টি জানতে পেরে সুবেদার আশরাফুল ও নারী কয়েদি মোছাঃ মেঘলা খাতুন সীমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। ঘটনা জানাজানির ভয়ে তারা কারাগারের ভেতরে সীমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। হাজতি সীমা এসব ঘটনা জানিয়ে জেল সুপারের কাছে বিচার দেবেন জানালে সুবেদার আশরাফুল তাকে ভয়-ভীতি ও হুমকি দেন। এক পর্যায়ে ২০ মার্চ দুপুরে সুবেদার আশরাফুলের নেতৃত্বে নারী কয়েদি মেঘলা, কারারক্ষী মোছাঃ সাবানা বেগমসহ কয়েকজন তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন। পরে সেলের ভেতরে নিয়ে সীমাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে রশি দিয়ে দুই পা বেঁধে আবারও মারধর করেন। এই নির্যাতনের ঘটনা বাইরে প্রকাশ করলে সীমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।’

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘করিমন নেছা একাধিকবার তার মেয়ের সাথে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। অবশেষে হাজিরার তারিখে আদালতে মেয়ের সাক্ষাৎ পান মা করিমন নেছা। এদিন সীমা মায়ের কাছে নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দেন এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের চিহ্ন দেখান।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান কারারক্ষী মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘মোর্শেদা খাতুন একজন উগ্রপন্থী কয়েদি। বিভিন্ন সময়ে তিনি বন্দী কয়েদির নানাভাবে নির্যাতন করে কারাগারে প্রভাব বিস্তার করেন। প্রতিবাদ করায় এর আগেও তিনি বিভিন্ন কয়েদি এবং কারারক্ষীকে মারপিট পর্যন্ত করেছেন। এসব ঘটনায় এর আগেও তাকে দুইবার অন্য কারাগারে বদলি করা হয়েছিল।’

ঘটনার দিন তিনি তার থাকার কক্ষের কাপড় রাখার জন্য অতিরিক্ত একটি র‌্যাক দখল করেন। সেটি খালি করতে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে দুইজন নারী কারারক্ষীকে মারপিট করেন। পরে অন্য হাজতিদের সহযোগিতায় ওই দুই কারারক্ষীকে উদ্ধার করা হয়। কারারক্ষীদের করা মারপিটের ঘটনা থেকে নিজেকে বাঁচাতে তিনি বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেছেন।’

কারারক্ষীদের বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা জেলা কারাগারের জেল সুপার মোঃ জাবেদ মেহেদী। তিনি বলেন, ‘কারাগারে এই ধরনের ঘটনা ঘটার কোনো সুযোগ নেই। যেহেতু অভিযোগ উঠেছে তাই আমারা তাদের বদলি করে দিয়েছি।’

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ জনের মৃত্যু Previous post ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি
দেশে করোনায় আবারো একজনের মৃত্যু Next post গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জনের করোনা শনাক্ত