এইচএসসি পরীক্ষা ২ মাস পেছাতে রংপুরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
চলতি বছরের ৩০ জুনের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এই মানববন্ধন করে তারা। এই সময় বিভিন্ন কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
একই সিলেবাসে ব্যাচ বৈষম্য, দ্বিতীয় বর্ষের সিলেবাস অসম্পূর্ণ রেখে নির্বাচনী পরীক্ষা আয়োজন করায় ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষা দুই মাস পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানায়, ক্লাস শুরু হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। আর টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ক্লাস শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া হয়। টেস্ট পরীক্ষা মানেই কলেজ থেকে শিক্ষার্থীর বিদায়, সেখানে আর কোন ক্লাস পরীক্ষার সুযোগ থাকে না। এক বছরে কলেজে আরও ৩ থেকে ৪টি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এতে ৬০ থেকে ৭০ দিনের মতো চলে যায়। এত অল্প সময় সিলেবাস সম্পূর্ণ হয়না।
তারা আরও জানায়, ২০২২, ২০২৩ সালের পরীক্ষার্থীরা ২০ থেকে ২২ মাস সময় পেয়েছে। ২০২৫ সালের শিক্ষার্থীরাও পাবে। ৩০ জুন পরীক্ষা হলে সবচেয়ে কম সময় পাবে তারা। এই সময়ে ভালো ফলাফল তো দূরের কথা, পাস করার মতো অবস্থাও অনেকের নেই। তাই ৩০ জুনের পরীক্ষা দুই মাস সময় পিছিয়ে নতুন সিলেবাস করার দাবি জানায় তারা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেছে, ‘এটা আমাদের দাবি, আমরা শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা কেন আন্দোলনে নামব? আজকের আমাদের টেবিলে বসে পড়ার কথা! অথচ রাজপথে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করছি। কারণ একটাই-এইচএসসির পর ভার্সিটির পরীক্ষা, সেখানে একটা ভাল ফলাফল না হলে, টেকা খুব ডিফিকাল্ট। ভালো ফলাফল করার জন্য একটু সময় দরকার। আমাদের দাবি পরীক্ষার পিছিয়ে নেওয়া হোক, আমাদের পড়ার সময় দেওয়া হোক।’
গত ২ এপ্রিল আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাশার স্বাক্ষরিত এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন বা সময়সূচি থেকে জানা যায়, চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ৩০ জুন শুরু হবে। ১১ আগস্ট লিখিত পরীক্ষা শেষে ১২ আগস্ট থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা চলবে।
সাধারণত কোভিড-১৯ মহামারির আগে প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হতো এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। আর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতো এপ্রিলে। কিন্তু করোনার ধাক্কায় এলোমেলো হয়ে যায় পরীক্ষার স্বাভাবিক সূচি। মহামারির কারণে গত কয়েক বছর এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। একই কারণে ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা হলেও এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়া হয়।
পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শুধু গ্রুপভিত্তিক ৩টি বিষয়ে পরীক্ষার সময় ও পরীক্ষার নম্বর হ্রাস করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নেওয়া হয়। সেই সিলেবাস কিছুটা বাড়িয়ে ২০২২ সালে নেওয়া হয় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। সে বছর পরীক্ষার সময় কিছুটা কম ছিল। আর ২০২৩ সালের এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের পরীক্ষা হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে।
তবে এসএসসির আইসিটি ছাড়া এই দুই পাবলিক পরীক্ষা অন্যান্য বিষয়ে পূর্ণ সময় ও নম্বরে নেওয়া হয়েছিল।