কলেজছাত্র জোবায়ের হত্যা মামলার এখন গ্রেফতার হয়নি কেউ
কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীতে কলেজছাত্র জোবায়ের হোসেন আমিন (১৯) হত্যাকাণ্ডে মামলা করার দেড় মাসেও কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি। আজ বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে প্রেসক্লাব চিলমারীর অস্থায়ী কার্যালয়ে মামলার আসামিদের গ্রেফতার ও বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের বাবা আব্দুল জলিল।
জোবায়ের হোসেন আমিনের বাড়ি চিলমারী উপজেলার মণ্ডলপাড়া গ্রামে। তিনি কারমাইকেল কলেজ এর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত ১৯ জুলাই ব্রহ্মপুত্র নদে পরে নিখোঁজ হওয়ার এক দিন পর কলেজছাত্র জোবায়ের হোসেন আমিনের লাশ ভেসে উঠে। বিকৃত লাশ উদ্ধারের পর পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হয়। মামলা দায়েরের ৪৫ দিন পরও এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেফতার হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের বাবা আব্দুল জলিল বলেন, ‘গত ১৯ জুলাই রাত ১টা থেকে রাত ৩টার মধ্যে কোন একসময়ে আমার ছোট ছেলে জোবায়ের হোসেন আমিনকে হত্যা করে লাশ চিলমারী নৌবন্দরের রমনা ঘাটের বিআইডব্লিউটিএ পন্টুনের নিচে ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্ত শেষ করে মরদেহ আমার কাছে হস্তান্তর করে। গত ২১ জুলাই চিলমারী মডেল থানায় মোঃ সাইনান স্বচ্ছ (২১) ও মোঃ ইউসুফ আহম্মেদ জায়েদের (২১) নামে ও আরও ৬-৭ অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করি।’
আব্দুল জলিল আরও বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয় চিলমারী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সিআই মোঃ নাজমুল হককে। কিন্তু এখনও মামলার কোন আসামি গ্রেফতার করা হয়নি। আসামিরা আমার ছেলের সাথে চলাফেরা করতেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। তার অংশ হিসেবে আমার ছেলেকে গত ১৮ জুলাই রাত ১০টার দিকে আমার বাড়ির সামনে থেকে মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা শেষে চিলমারী বন্দরের রমনা ঘাটে নিয়ে যায়। সেখানে জোবায়ের হোসেন আমিনকে হত্যা করে লাশ চিলমারী নৌবন্দরের রমনা ঘাটের বিআইডব্লিউটিএ পন্টুনের নিচে ফেলে দেয়া হয়।’
এজাহারে সুনির্দিষ্টভাবে আসামিদের নাম থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ আব্দুল জলিলের। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি অতি দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য আপনাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এই বিষয়ে চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণ কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, ‘আমাদের এখানে মামলা দায়ের হলেও ঘটনাস্থান নৌ থানা এলাকা হওয়ায় মামলা সেখানে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামি ধরতে আমরা নৌ থানাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছি।’
এই বিষয়ে চিলমারী নদীবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নাজমুল হক বলেন, ‘আমরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছি। শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’