বিশ্বজুড়ে আলোচিত ২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় ২৪ জন নিহত হন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ১৭ মিনিটে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিশ্বজুড়ে আলোচিত এ হামলা মামলার রায় হয়। উক্ত হামলার মামলায় গ্রেফতারকৃত আট আসামির মধ্যে ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান।
বিশ্বজুড়ে আলোচিত গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা মামলায় আট আসামির মধ্যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত , এবার এ মামলার
সকল ধরণের কার্যক্রম উচ্চ আদালতে প্রেরণসহ আপিল করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তবে রায় অনুযায়ী আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন। অন্যদিকে এই আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে প্রেরণ করতে হয়।
মামলার সব নথি আসা এবং আসামিদের আপিলের পর পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করতে হয়। এরপর ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়। তবে কোনো কোনো মামলার ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরি করা হয় এবং পরে আপিল শুনানি শুরু হয়।
এই মামলার রায়ে আদালত বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডাদেশ হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক অনুমোদনের জন্য অত্র মামলার নথি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগে প্রেরণ করা হোক।’
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারায় বলা হয়েছে, দায়রা আদালত যখন মৃত্যুদণ্ড দান করেন, তখন হাইকোর্ট বিভাগের নিকট কার্যক্রম পেশ করা হইবে এবং হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক উহা অনুমোদন করা না হইলে, দণ্ড কার্যকর করা যাইবে না।
মামলার পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এ রায়ের পরে ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য) হিসাবে মামলাটি হাইকোর্টে আসবে। তখন আমরা আমাদের সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে এ মামলাটি পরিচালনা করার চেষ্টা করবো। যাতে জঙ্গিবাদের ব্যাপারে আদালত যে রায় দিয়েছেন, সে রায়টি বহাল থাকে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।
বিশ্বজুড়ে আলোচিত নৃশংস এ হামলায় ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, একজন ভারতীয়, একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক ও দু’জন বাংলাদেশিসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করা হয়। এ হামলায় নিহত হয়েছে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম।
এ হামলার পর জিম্মি অবস্থার অবসানে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গি। তারা হচ্ছে- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জল।
এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছে নব্য জেএমবির আরও ৮ সদস্য। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিম অব্যাহতি আবেদন করেন। পরে হাসনাত রেজা করিমকে অব্যাহতি দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস।
ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
একই বছরের ২৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান।
এক বছরের বিচারকালে মামলার মোট ২১১ জন সাক্ষীর ১১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন এবং রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে গত ১৭ নভেম্বর এ মামলার বিচারকাজ শেষ হয়। ওইদিনই আদালত রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
আপনার স্ত্রী কখনও মুখে বলবেন না- তবে বুজবেন কি ভাবে
আরসিএন ২৪ বিডি /২৭ নভেম্বর , ২০১৯