October 13, 2024
মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে হত্যা করলো বন্ধুকে

মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে হত্যা করলো বন্ধুকে

Read Time:5 Minute, 16 Second

মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ঘনিষ্ট বন্ধু নবির হোসেনের (১৬) হাতে খুন হয় শাজাহানপুর উপজেলার স্কুলছাত্র নওফেল শেখ (১৪)।

পরে সেই ফোন বিক্রির টাকায় বান্ধবীকে নিয়ে হোটেলে ফুর্তি করে নবির হোসেন।

নিহত নওফেল শেখ শাজাহানপুর উপজেলার দাড়িগাছা গ্রামের ইসরাইল শেখের ছেলে এবং দাড়িগাছা ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

আজ মঙ্গলবার (২৮ জুন) বেলা ১২টায় বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ চক্রবর্তী এই তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে, গতকাল সোমবার (২৭ জুন) গাজীপুর জেলার টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকা থেকে নবির হোসেনকে গ্রেফতার করে বগুড়া জেলা পুলিশ। নবির হোসেন শাজাহানপুর উপজেলার দাড়িগাছা গ্রামের মুকুল হোসেনের ছেলে।

পুলিশ সুপার বলেন, নবির হোসেন লেখাপড়া না করলেও নওফেল শেখ ছিল তার ঘনিষ্ট বন্ধু। তারা দাড়িগাছা গ্রামের বিভিন্ন জঙ্গলে গিয়ে মাঝে মধ্যেই ধুমপান করতো।
আজ থেকে ২ মাস আগে বাবা ইসরাইল শেখ জমি বিক্রি করে ১৮ হাজার টাকায় একমাত্র ছেলে নওফেলকে স্মার্টফোন কিনে দেন। এরপর থেকেই বন্ধু নবির হোসেন নওফেলের মোবাইল ফোনটি হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে।

সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৮ জুন নওফেলের জন্মদিন থাকায় বেলা ১১টার দিকে নবির হোসেন নওফেলকে ধুমপান করার কথা বলে জঙ্গলে নিয়ে যায়। নবিব হোসেন আগে থেকেই একটি মাফলার সাথে রাখে নওফেলকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে।নওফেল জঙ্গলের একটি ইউক্যালিপটাস গাছের সাথে হেলান দিয়ে ধুমপান করার সময় নবির হোসেন তার কাছে থাকা মাফলার নওফেলের গলায় পেঁচিয়ে গাছের সাথে ফাঁস দেয়। নওফেল নিস্তেজ হয়ে পড়লে নবির হোসেন পাশের জমি থেকে একটি বাঁশের লাঠি এনে নওফেলের মাথা আঘাতে করে মুত্যু নিশ্চিত করে। এরপর মরদেহ টেনে গভীর জঙ্গলে ফেলে সেখান থেকে চলে আসে।

এরপর নবির হোসেন মোবাইল ফোনটি নিয়ে বগুড়া শহরে আসে এবং শেরপুর থেকে তার বান্ধবী জাকিয়া খাতুনকে শহরে ডেকে আনে। দুইজন একত্রিত হয়ে নিজেদেরকে ভাইবোন পরিচয় দিয়ে সাতমাথায় একটি দোকানে ৫ হাজার টাকায় মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে।

সেখান থেকে তারা দুইজন বগুড়া শহরের গালা পট্টিতে হোটেল টুইন ব্রাদার্সে যায় এবং ২ হাজার টাকায় একটি রুম ভাড়া করে। নবির হোসেন সেখান থেকে তার বন্ধু হেলালকে (১৬) মোবাইল ফোনে ডেকে হোটেলে নিয়ে আসে এবং তার বান্ধবীর সাথে দুইজনে শারীরিকভাবে মিলিত হয়। বিকেলে বান্ধবী জাকিয়া খাতুনকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে যে যার মত বাড়িতে চলে যায়।

গত ২০ জুন বিকেলে জঙ্গল থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয় লোকজন গিয়ে নওফেলের মরদেহ শনাক্ত করে। এর পরই নবির হোসেন গ্রাম থেকে পালিয়ে যায়।

পুলিশ সুপার বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর গোয়েন্দা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করা হয়। পুলিশের টিম প্রথমে সাতমাথা থেকে নওফেলের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে।

এরপর ফোনের সূত্র ধরে আটক করা হয় নবির হোসেনের কথিত বান্ধবী জাকিয়া খাতুনকে। পরে পুলিশের একটি দল নবির হোসেনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে টঙ্গী থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পরে নবির হোসেনের দেখানো মতে জঙ্গল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাফলারটি উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন কাগজপত্র না দেখে কম দামে মোবাইল ফোন কেনা ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক নবির হোসেনকে তার বান্ধবীসহ হোটেলে রুম ভাড়া দেওয়ায় হোটেল টুইন ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরসিএন ২৪ বিডি / ২৮ জুন ২০২২

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

করোনার সংক্রমণ নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী Previous post ৫-১২ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া হবে-স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটর সাইকেল চালক নিহত Next post দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটর সাইকেল চালক নিহত