ডেস্ক রিপোর্ট:বর্তমানে ঘরে ঘরে শিশুরা যৌন নিপীড়ন এর শিকার হয়ে থাকে। এই যৌন নিপীড়ন থেকে শিশুদেরকে রক্ষা করার জন্য আমাদেরকে সচেতন হবে।বিশেষ করে এ বিষয়ে পিতামাতাকে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে।
শিশুরা যৌন নিপীড়ন এর শিকার যে শুধু অপরিচিতদের কাছে হয়ে থাকে এমনটা নয়, অনেক সময় পরিচিত এমন কি খুব কাছের মানুষের কাছ থেকেও হয়ে থাকে।
চাঁদা (ইস্যু): রংপুরে এক বিকাশ ব্যবসায়ীকে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা
এ বিষয়ে ইউ.এস. জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট’স ব্যুরো অব জাস্টিস স্ট্যাটিস্টিক (বিজেএস) অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে অপরিচিত দ্বারা ৬ বছরের কম বয়সের ৩ শতাংশ এবং ৬ থেকে ১১ বছর বয়সের ৫ শতাংশ শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকে।
আবার যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল চাইল্ড ট্রমাটিক স্ট্রেস নেটওয়ার্কের সদস্য এবং শিশু যৌন নিপীড়ন চিকিৎসার ডেভেলপার ইসথার ডেবলিঞ্জার বলেন, যৌন সুযোগ-সন্ধানীরা যে রাস্তাঘাটে ঘুরঘুর করবে তা নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা শিশুদের কাছে পরিচিত ও বিশ্বস্ত এবং পরিবারের সদস্য হয়ে থাকে।
মূল কথা হলো শিশুরা শুধু মাত্র অপরিচিত দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকে না, অনেক সময় প্রতিবেশী, পরিবারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, বেবি টিচার, কোচ, স্কাউট লিডার এবং বিশ্বস্ত ও কর্তৃত্বের আসনে থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হতে পারে।
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক বরখাস্ত
তাই আমাদের শিশুকে আমাদের কেই রক্ষা করতে হবে। শিশুদেরকে রক্ষার জন্য যে পদক্ষেপ নিতে হবে সেগুলো হলো :
১। কোনো ধরনের বাজে ঘটনা ঘটার পূর্বেই প্রতিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এর জন্য পিতামাতাকে এগিয়ে আসতে হবে, শিশুর বয়সের ওপর ভিত্তি করে তাদেরকে যৌন নিগ্রহের কনসেপ্ট বুঝিয়ে দিতে হবে এবং যৌন নিপীড়নের সম্ভাবনা থাকলে কি প্রতিক্রিয়া দেখাবে তার শিক্ষা দিতে হবে।
২।যারা আপনার শিশুকে একা বাহিরে নিয়ে যেতে চায় এবং মুক্তমনা প্রকৃতির কারো সঙ্গে বাইরে ঘুরতে যেতে না দেওয়া। এমনকি শিশুদের প্রিয় ব্যক্তির সঙ্গেও একা বাইরে যেতে দিবেন না।
সৌন্দর্য ধরে রাখতে হলে করণীয়
৩। শিশু-প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞের মতে, শিশুদেরকে ‘ভালো স্পর্শ’, ‘খারাপ স্পর্শ’ এবং ‘গোপন স্পর্শ’ সম্পর্কে খুব অল্প বয়সেই ধারণা দেওয়া প্রয়োজন।এ বিষয়ে অ্যামারেন্থ বলেন, শিশুদের কাছে ‘ব্যাখা করুন যে আলিঙ্গন, পিঠে হাত বুলানো কিংবা গালে চুমু দেওয়া হচ্ছে ভালো স্পর্শ, আঘাত করা কিংবা ধাক্কা দেওয়া হচ্ছে খারাপ স্পর্শ এবং গোপন স্পর্শ হচ্ছে তা যখন কেউ স্পর্শ করতে চায় এবং এটি গোপন রাখতে বলে।’ তিনি আরো বলেন, ‘শিশুদেরকে বলুন যে যদি কেউ গোপন স্পর্শ করতে চায় তাদেরকে ‘না’ বলা উচিত এবং অবিলম্বে এ বিষয়ে বাবা-মাকে জানানো উচিত।’
৪। এ বিষয়টি নিয়ে শিশুদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করে উচিত। এতে করে আপনি তাদের কাছ থেকে সহজে জানতে পারবেন যে তারা যৌন নিপীড়নের শিকার হতে যাচ্ছে কিনা। শিশুদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে দ্বিধা- দন্ডে ভুগবেন না। কারণ তাদেরকে যৌন নিপীড়ন কী তা বুঝানো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এবং সাথে এটাও জানানো দরকার যে যাই ঘটুক না কেন, তারা এর জন্য দায়ী নয় এবং এটি তাদের ভুল নয়।
৫। আপনার শিশুদের স্বাভাবিক আচরনের দিকে লক্ষ্য রাখুন।কারণ, শিশুর আচরণ যৌন নিগ্রহের প্রথম লক্ষণ ধরতে সাহায্য করে। যদি কোনো শিশুর আচরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে তাহলে পিতামাতার উচিত প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা এবং রে সমাধানের ব্যবস্থা করা।
কি ভাবে বুঝবেন শিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ?
৬। প্রত্যেক পিতামাতারা উচিত তাদের সন্তানদেরকে গোপন স্পর্শর জায়গা কি তা বোঝানো। কিংবা গোসলের পোশাক শরীরের যতটুকু স্থান আবৃত রাখে তা হচ্ছে তাদের গোপনাঙ্গ এবং এসব জায়গায় কাউকে স্পর্শ করতে দেওয়া উচিত নয়।
৭। আপনার শিশু যখন স্কুল থেকে বাসায় ফিরে তখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন যে কেউ ভালো স্পর্শ দিয়েছে কিনা,বা আজ স্কুলে কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা, তারপর খারাপ স্পর্শ সম্পর্কে বলতে বলুন এবং শেষে জানতে চান যে কেউ গোপন স্পর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেছে কিনা। আপনি যদি প্রতিদিন এসব বিষয় নিয়ে শিশুদের সাথে কথা বলতে থাকেন তাহলে একটা সময় শিশুটি এই বিষয়ে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে ফলে , এই বিষয়ে সে আপনার কাছে আর কিছুই গোপন করবে না। যা তার সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে সহায়তা করবে।
আরসিএন ২৪ বিডি ডটকম / ২৩ জানুয়ারি ২০২০
আপডেট : ১১:২৫:০৫ পিএম