জিএম কাদের’র শেষ, সেখানেই শুরু রওশনের
সময় যত গড়াচ্ছে আগামী নির্বাচনের জোট প্রশ্নে জাতীয় পার্টির মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। যেখানে জিএম কাদের’র শেষ, সেখান থেকে আওয়ামী লীগের সখ্যতা শুরু করেছেন রওশন এরশাদ।
২০১৮ সালের নির্বাচনের ঘটনা সবার জানা, তখন এরশাদ ছিলেন গুরুতর অসুস্থ। এবারও পেছন থেকে কলকাঠি নাড়েন রওশন এরশাদ। এতে করে আওয়ামী লীগের আরও আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন রওশন। হুসেইন মুহুম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর টানাটানি শুরু হয় বিরোধীদলীয় নেতার আসন নিয়ে।
সংসদীয় দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা হতে চিঠি পাঠান জিএম কাদের। অন্যদিকে রওশনও পাল্টা চিঠি দিলে রওশনকেই বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসান সরকার। এতে জিএম কাদের ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। সরকারের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়তে থাকে।
জিএম কাদের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আর কোন রকম সম্পর্ক রাখতে চান না জিএম কাদের। নেতাকর্মীদের কঠোর ভাষায় সরকারের সমালোচনা করার নির্দেশনা দিয়েছেন। জিএম কাদের একাধিক সভায় বলেছেন, আওয়ামী লীগের পক্ষে কেউ দালালি করলে তার পরিণতি করুণ হবে। জাপা আওয়ামী লীগের সঙ্গে নেই, ভবিষ্যতে কোন জোটে যোগ দেবে তা সময়েই বলে দেবে।
তবে বিএনপির অনেক এজেন্ডার সঙ্গে একমত হতে দেখা যাচ্ছে তাকে। সম্প্রতি বিএনপির সুরে ইভিএম’র বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছেন, পাশাপাশি এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন। ২০ মে এক বক্তৃতায় জিএম কাদের বলেছেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারের সামনে প্রশাসন বা সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো অসহায় হয়ে পড়ে। তাই কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে।
জাপার গন্তব্য কি এ নিয়ে প্রকাশ্য কোন মন্তব্য না করলেও ভেতরে ভেতরে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। সম্প্রতি চিকিৎসার নামে সিঙ্গাপুর গেলেও বিষয়টি রাজনৈতিক ছিল বলে অনেকে দাবি করেছেন। সেখানে বিএনপির কয়েকজন শীর্ষনেতার সঙ্গে তার বৈঠক হয়।
গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদে জিএম কাদের’র কার্যালয়ে (বিরোধীদলীয় উপনেতার) বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা ও হারুনুর রশীদের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছেন তার মেয়ের জামাইয়ের বড় ভাই মাহমুদুর রহমান।
লক্ষ্মীপুর বিএনপির সাবেক এই নেতা এখন জিএম কাদের’র উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। ধারনা করা হয় তার মাধ্যমেই বিএনপির ঘনিষ্ট হয়ে উঠছেন জিএম কাদের। আরেকজন রয়েছেন বিএনপির সাবেক নেতা সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু।
তৃণমূলের নেতারাও অনেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পক্ষে। তারা মনে করেন আওয়ামী লীগ তাদের সঙ্গে যথাযথ মূল্যায়ন করেনি। তবে সিনিয়র নেতাদের বড় একটি অংশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকার পক্ষে। যে কারণে আগামী নির্বাচনে জিএম কাদের’র চাওয়া কতটা পুরণ হবে সে নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন খোদ এরশাদ রওশনের সঙ্গে কুলে উঠতে পারেন নি, সেখানে জিএম কাদের’র অবস্থান বেশ নড়বড়ে।
অনেকে মনে করছেন রওশন এরশাদ আগের মতোই অনেককে নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে যেতে পারেন। তেমন কিছু হলে অনেক নেতাই তার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন।
বিশেষ করে জিএম কাদের’র কিছু সিদ্ধান্তে নাখোশ হওয়া নেতারা। তেমনটি হলে জাতীয় পার্টি (রওশন), জাতীয় পার্টি (কাদের) নামের পৃথক দলের শঙ্কা দেখছেন দলের নেতাকর্মীরা।
আরসিএন ২৪ বিডি / ১৯ জুন ২০২২
- ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডায় নীলফামারীতে জনজীবন বিপর্যস্ত
- তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ১১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস!
- পীরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলনকে গ্রেপ্তার
- ডিমলায় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানসহ দুইজন গ্রেপ্তার
- সাদুল্লাপুরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার
Average Rating