November 9, 2024
রংপুরে বাসা হতে এক আইনজীবীর লাশ উদ্ধার

রমেকের ডরমেটরি থেকে চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার

Read Time:5 Minute, 45 Second

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল আবাসিক ভবন থেকে মোঃ আখতারুজ্জামান (৫২) নামে এক চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের শেখ রাসেল পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডরমেটরি ভবনের ষষ্ঠ তলার ৬-এফ কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। চিকিৎসক মোঃ আখতারুজ্জামান নীলফামারী সদর উপজেলার প্রতিভা নীলপাড়া গ্রামের মোঃ মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পিজি হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের মেডিকেল অফিসার। তিনি রংপুর মেডিকেলে পোস্ট গ্রাজুয়েটের একজন শিক্ষার্থী এবং ৩ দিন আগে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আসেন তিনি।

জানা যায়, আজ মঙ্গলবার সকালে মরদেহ গলে রক্ত দরজা বাহির বের হলে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মোঃ মিলনুর রহমান মিলন পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থানে এসে দরজা ভেঙ্গে ওই চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছেন।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালী জোন) মোঃ আরিফুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, ওই চিকিৎসক দীর্ঘদিন ফ্যাটি লিভারে ভুগছিলেন। তিনি অস্বাভাবিক খাবার খেতেন। কখন কখন একসাথে সারা দিনে ২৫০ গ্রামের কোল্ড ড্রিংকস ৫০টি, ৪০ টি ডিম, জর্দার সাথে সয়াবিন তেল মেখে খেত, সঙ্গে প্রচুর ফাস্টফুড খেতেন। খাওয়ার বিষয়ে তাকে নিষেধ করলে তিনি সে বিষয়ে কারো কথায় কর্ণপাত করতেন না। তার দুইজন স্ত্রী রয়েছে। বড় স্ত্রী মোছাঃ জেসমিন আক্তার ও ছোট স্ত্রী মোছাঃ কোহিনুর আক্তার। ছোট স্ত্রীর দাবী, আখতারুজ্জামান তার সাথে প্রতারণা করে বিয়ে করেছিল।

এই বিষয়ে নিহত আখতারুজ্জামানের দ্বিতীয় স্ত্রী রংপুর নগরীর ধাপ শিমুলবাগ এলাকার মোছাঃ কোহিনুর আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমার সঙ্গে ৩ দিন আগে মুঠোফোনে আখতারুজ্জামানের কথা হয়েছে। তখন উনি গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে ছিলেন। উনি প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন। এর মধ্যে কবে উনি রংপুরে এসেছেন, সেটা আমি জানতাম না। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মৃত্যুর সংবাদ জানতে পেরে ঘটনাস্থানে এসেছি। তবে এখন পর্যন্ত বলতে পারছি না কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি তো জানতাম উনি ঢাকার বাসিন্দা কিন্তু পরে জেনেছি নীলফামারী ওনার জন্মস্থান। ঢাকা এবং নীলফামারীর ঠিকানায় ওনার দুইটি এনআইডি কার্ড রয়েছে। আমি ওনার দ্বিতীয় স্ত্রী, আমার কোন সন্তান নেই। আমাদের মধ্যে পারিবারিক কোন অশান্তি কলহ ছিল না। উনার প্রথম স্ত্রীর সংসারে ৩ জন সন্তান রয়েছে।

মোছাঃ কোহিনূর আক্তার বলেন, আমার স্বামী ঢাকায় পিজি হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। রংপুর মেডিকেল কলেজের তিনি সাবেক শিক্ষার্থী। এখানে তিনি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করতে ৮ বার পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে পারেন নি। তার ৯ম তম পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। শারীরিক অসুস্থতার কারণে উনি মানসিক ভাবে চিন্তিত ছিলেন। তিনি লিভার ও পায়ের ব্যাথাসহ কয়েকটি রোগেও ভুগছিলেন।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালি জোন) আরিফুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত না হওয়া পর্যন্ত কোন কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ মাহফুজুর রহমান জানান, ডা. আক্তারুজ্জামান পোস্ট গ্রাজুয়েটের শিক্ষার্থী ছিলেন। সকালে ডরমেটরি থেকে জানানো হয়, আক্তারুজ্জামানের রুম থেকে গন্ধ আর রক্ত আসছে। পরে বিষয়টি আমরা পুলিশ ও জেলা প্রশাসককে জানাই। একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দরজার তালা ভেঙে উদ্ধার করা হয়।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
গাইবান্ধায় টার্মিনাল থেকে বাস উধাও! Previous post গাইবান্ধায় আগুনে পুড়ে গেছে গবাদিপশু ও ঘরবাড়ি
তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা পরিবর্তন হয়েছে Next post তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা পরিবর্তন হয়েছে