পীরগাছায় যুবককে নির্যাতনের ৩ দিন পর উদ্ধার
রংপুরের পীরগাছায় সুমন মিয়া (২৮) নামে এক যুবককে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সুদের কারবারির বিরুদ্ধে। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ৩ দিন ধরে শিকলে বেঁধে নির্যাতনে করা হয়র ওই যুবককে।
এরপর অসুস্থ হয়ে পড়লে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে পীরগাছা থানা-পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ সময় পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজন সুদ কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে হাসপাতালে ভর্তি আহত যুবকের অবস্থা অবনতি হলে আজ শনিবার তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এর আগে গতকাল শুক্রবার উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের চাপড়া বগুড়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ শনিবার (১৮ জুন ) ৪ জনকে আসামি করে পীরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী যুবকের বাবা শফিকুল ইসলাম ছপু।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার বিকেলে ধারের ৬০ হাজার টাকা পাওয়ার অজুহাতে চাপড়া বগুড়াপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম ছপুর ছেলে সুমন মিয়ার (২৮) অপহরণ করে নিয়ে যান একই গ্রামের সুদের কারবারি মনজু মিয়া ও তাঁর ছেলে রেজওয়ান, ইমরান ও আরিফ মিয়া। এ সময় তাঁরা সুমন মিয়াকে জিম্মি করে টাকা পরিশোধের জন্য তাঁর পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
বেকার সুমন মিয়ার কাছে কিসের টাকা পাবেন, এত টাকা তাকে কেন দেওয়া হলো? এসব বিষয় তাঁর বাবা ও স্ত্রী জানার চেষ্টা করলেও তাঁদের কিছু বলা হয়নি। কিন্তু বুধবার থেকে শিকলে বেঁধে রাখা হয় সুমন মিয়াকে। তাঁকে খাবারও দেয়নি তাঁরা। উল্টো পানি ভর্তি বোতল দিয়ে তাঁর সারা শরীরে চলান নির্যাতন। একপর্যায়ে সুমন মিয়া পালানোর চেষ্টা করলে তাঁকে ধরে পানিতে চুবানো হয়। হাত-মুখ বেঁধে রাতভর চলানো হয় নির্যাতন।
এদিকে সুমন মিয়ার বাবা ছপু ও স্ত্রী লাকী বেগম টাকা পরিশোধে সময় চাইলে গতকাল শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত সময় বেধে দেন অভিযুক্তরা। এই সময়ের টাকা না পেয়ে তাঁকে মেরে ফেলার জন্য বস্তা ও ধারালো ছুরি নিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে,
এমন খবরে ভেঙে পড়ে সুমন মিয়ার পারবার। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে প্রতিকার চাইলে রাত আড়াই টার দিকে পীরগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সুদের কারবারি মনজু মিয়ার বাড়ি থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন। এ সময় মনজু মিয়ার ছেলে আরিফ মিয়াকে (২৪) আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
আজ হাসপাতালে গেলে সুমন মিয়ার স্ত্রী লাকি বেগম বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। কী কারণে তাঁকে এত টাকা দিল এবং তার জন্য এভাবে নির্মমভাবে মারল জানি না। আমার স্বামীও টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমাকে কিছু জানায়নি। তবুও আমরা টাকা পরিশোধে সময় চাইলেও তাঁরা শোনেননি। তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে।
সুমন মিয়ার বাবা শফিকুল ইসলাম ছপু বলেন, ‘ছেলে অবস্থা খারাপ। তাঁকে রংপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আমি এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি এর বিচার চাই।’
ঘটনার বিষয় জানতে অভিযুক্ত মনজু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি। তাঁর এক স্বজন আনজু মিয়া বলেন, অটোভ্যান কেনার জন্য সুমন মিয়া ৬০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। এ টাকা উদ্ধারে তাঁকে ধরে আনা হয়েছে বলে জানি।
এ বিষয়ে পীরগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে আমরা সুমন মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি।
এ সময় আরিফ মিয়া নামে একজনকে আটক করি। আজ শনিবার মামলা দায়েরের পর আরিফ মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রংপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আরসিএন ২৪ বিডি / ১৮ জুন ২০২২
- গাইবান্ধায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিক্ষকের মৃত্যু
- পীরগাছায় ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু
- বেরোবিতে প্রধান অতিথির সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেছেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক উদ্বোধন করলেন উপদেষ্টা নাহিদ
- দিনাজপুরে শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
Average Rating