রংপুরের ক্ষতিগ্রস্ত ৫ হাজার বাড়িঘর
বর্ষাকাল এলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে তিস্তা পাড়ের লাখো মানুষ। প্রতিবছরই এ সময়টাতে ৫ থেকে ৬ বারের ঢলে ভাঙে বসতবাড়ীসহ আবাদি জমি এবং বন্যায় ভাসে এ অঞ্চলের মানুষ।
আজ শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর পানি বেড়ে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারি ইউনিয়নের পশ্চিম বাগেরহাট ও শংকরদহ এলাকায় পানিতে প্লাবিত হয়েছে ৫০০ বাড়িঘর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জমির ফসল ও রাস্তাঘাট। দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়েছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলছেন, এক সপ্তাহ ধরে পানির নিচে পড়ে আছি আমরা। বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় বাস করছি। খাওয়া দাওয়া করছি অনেক কষ্ট করে। সরকারিভাবে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাইনি এখনো।
অপরদিকে , তিস্তার পানি সাত দিন ধরেই বাড়ছে। দিনে দিনে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে জানায় স্থানীয়রা। কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনিয়াচরের পশ্চিমপাড়ায় বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভেঙে যাচ্ছে বাঁধ, বাঁশঝাড়, জমি, বসতবাড়ি।
লক্ষীটারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদি জানান, বেড়িবাঁধে ভাঙনের ফলে ভোররাত থেকে বিপদসীমার ওপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই এলাকায় ৫ শতাধিক বাড়িঘর পানির নিচে। ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের রাস্তা ভেঙে গেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম।
লক্ষীটারি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মানিকা বেগম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে তিস্তায় পানি বাড়ছে, ভাঙন চলছে। পানি যদি আরো বাড়ে তাহলে এই পুরো এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। পরিষদ থেকে যতটুকু দেওয়ার আমরা দিয়ে যাচ্ছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে আজকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষগুলো।
কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, বেড়িবাঁধটির পূর্বের অংশ এরই মধ্যে ভেঙে গেছে। এখন খৈখাওয়া অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যদি এই ভাঙন রোধ করা না যায়, তাহলে খৈখাওয়া,পাঙ্গাটারি, মধ্যপাড়া, আমিনগঞ্জসহ আশপাশের প্রায় ১১ থেকে ১২টি গ্রামে ভাঙন দেখা দেবে।
আউলিয়া বাজার, বিনবিনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। হু হু করে বাডছে তিস্তার পানি। এছাড়া চিলাখালচর ও মটুকপুরচরে পানি ঢুকেছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ভাঙনকবলিত কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনিয়া চর ও লক্ষীটারি ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতির মুখে। তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এ কারণে এসব এলাকার বাসিন্দারা একটু সমস্যায় পড়ছে। তাদেরকে উঁচু স্থানে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, টেকসই মজবুত বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি সমীক্ষা করা হচ্ছে। সমীক্ষা প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদ উদ্দিন জানান, পিআই ও উপজেলা প্রকৌশলীকে সাথে নিয়ে তিস্তা পাড়ের পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকা পরিদর্শন করেছি। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত খাদ্য রয়েছে। দ্রুত পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।
আরসিএন ২৪ বিডি / ১৭ জুন ২০২২
- নীলফামারীতে গাঁজাসহ দুইজন গ্রেপ্তার
- নীলফামারীতে বিদ্যুতায়িত হয়ে এক কৃষকের মৃত্যু
- রংপুরে প্রতারক চক্রের দুইজন সদস্য আটক
- সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকিরসহ ২৫ জনের নামে চাঁদাবাজির মামলায় দুইজন গ্রেপ্তার
- পলাশবাড়িতে চালককে হত্যা করে অটোভ্যান ছিনতাই
Average Rating