জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতিকে দল থেকে বহিস্কার
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় আসন্ন জলঢাকা পৌরসভার মেয়র পদে উপ- নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী কমেটকে (কমেট চৌধুরী) পদপদবী সহ বিএনপি হতে বহিস্কার করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পত্রে ( বিএনপি/বহিস্কার/৭৭/১৬/২০২৪) তাকে বহিস্কার করা হয়।
যার অনুলিপি প্রদান করা হয় বিএনপির রংপুর বিভাগ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার এবং সাধারন সম্পাদক মোঃ জহুরুল আলমকে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেন।
সুত্র অনুযায়ী, উক্ত বিএনপি নেতা আগামী ২৮ এপ্রিল জলঢাকা পৌরসভা নির্বাচনের কমেট চৌধুরী মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। তাকে দল প্রার্থী থেকে বার বার নিষেধ করার পরেও তিনি দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করেন। কমেট চৌধুরীর বাবা আনোয়ারুল কবীর চৌধুরীও জলঢাকা পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। বাবার হাত ধরেই রাজনীতিতে আসেন কমেট চৌধুরী।
জলঢাকার সাধারন মানুষজন অভিযোগ করে জানান, কমেটের বাবা মারা যাওয়ার পর কমেট একবার পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েও ছিল। এরপর ভোট করলেও সে পরাজিত হয়। কমেট সব থেকে একটা অন্যায় করেছে তা হলো বাবা মারা যাবার পর সে তার মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। যার ফলে তার মা জলঢাকার ভাড়াবাড়ীতে বসবাস করছে। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এলাকার অনেক সচেতনমহল মন্তব্য করেন যে নিজের মায়ের যত্ন ও সেবা করতে পারেনা। বাড়ি থেকে বের করে দেয় সে কিভাবে পৌর সভার জনপ্রতিনিধি হয়ে এলাকার জনসেবা করবে। প্রশ্ন রাখেন অনেকে।
মেয়র পদের উপ-নির্বাচনে যে ৩ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে তারা হলেন, সাবেক পৌর মেয়র প্রয়াত ইলিয়াস হোসেন বাবুলের পুত্র নাসিব সাদিক হোসেন নোভা ( নারিকেল গাছ) ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী কমেট (রেল ইঞ্জিন) এবং বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী জলঢাকা উপজেলা শাখার আমীর এবং বর্তমান জেলা কমিটির সুরা ও কর্মপরিষদ গবেষক সদস্য প্রভাষক সাদের হোসেন (মোবাইল ফোন)।
উল্লেখ, জলঢাকা পৌরসভার টানা দুইবারের সফল মেয়র ইলিয়াস হোসেন বাবলু চলতি বছরের ২০ জানুয়ারী রাতে মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনার দিন শুক্রবার দিনভর পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রান্তিক মানুষের খোঁজখবর নেন এবং কম্বল বিতরণ করেন। রাতে পৌরসভার সতীঘাট এলাকায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ শুরু করেন। এই সময় কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছিলেন তিনি। সেখানকার কার্যক্রম শেষে গাড়িতে ওঠার সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দ্রুত জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইলিয়াস হোসেন বাবলু তৃণমূল হতে উঠে আসেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। তিনি উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ছিলেন। ইলিয়াস হোসেন বাবুল জলঢাকা বণিক সমিতি ও জলঢাকা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি, নীলফামারী জেলা বাস মালিক গ্রুপের সহ-সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী এবং ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।