এরিক এরশাদ ও বিদিশার উপর হামলা-শ্লীলতাহানীর অভিযোগ
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টভুক্ত প্রতিষ্ঠান রংপুরের পল্লীবন্ধু কোল্ড স্টোরেজে এরিক এরশাদ এবং তার মা বিদিশার উপর হামলা-শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে পল্লী নিবাস বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এরিক এরশাদ জানায়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মৃত্যুর পূর্বে এরিক এরশাদের ভরন-পোষনের জন্য বেশ কিছু সম্পদ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ট্রাস্টের নামে করেন। তার সেই সম্পদগুলো ভোগ করবেন এরিক এরশাদ। এরই মধ্যে রংপুর জেলার মিঠাপুকুরের পদাগঞ্জের পল্লীবন্ধু কোল্ড স্টোরেজও রয়েছে। তবে এই হিমাগারের শতকরা ৩০ ভাগ শেয়ার দেওয়া হয় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চাচাতো ভাই সামছুজ্জামান মুকুলের নামে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর ট্রাস্টের আওতাধীন হিমাগারটি পরিচালিত হলেও এরিক এরশাদ লভ্যাংশ হতে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। ট্রাস্টের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও জবরদখলের মাধ্যমে পল্লীবন্ধু হিমাগারটি কুক্ষিগত করে রেখেছেন এরশাদের ভাই মুকুল এবং স্থানীয় প্রভাবশালী বারী মুন্সি।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে এরিক এরশাদ ও তার মা বিদিশা ঢাকা থেকে রংপুর নগরীর পল্লীনিবাসে আসে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করে পল্লীবন্ধু কোল্ড স্টোরেজে যান। সেখানে বারী মুন্সি ও সামসুজ্জামান মুকুলের লোকজন এরিক এরশাদ ও বিদিশাকে ধাক্কাধাক্কি, গালি-গালাজ দিয়ে হিমাগার থেকে বের করে দেন। এক পর্যায়ে তারা মারমুখী হলে এরিক এরশাদ ও বিদিশা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থানে এসে পরিস্থিতি শান্ত করলে এরিক ও বিদিশা পল্লী নিবাসে ফিরে আসেন।
এরিক এরশাদ জানান, আমার ভরন পোষনের জন্য বাবা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট গঠন করলেও আমি আমার প্রাপ্য অর্থ পাচ্ছি না। আমার কোল্ড স্টোরেজ লুটেপুটে খাচ্ছে বারী মুন্সি এবং মুকুলের ছেলেরা। তাদের বোঝা উচিত আমি এতিম, আমার বাবা নেই। এরপরও তারা আমার সঙ্গে খারাপ আচারণ করেছে, আমার মাকে গালি-গালাজ করেছে। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে আমি ন্যায় বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে বিদিশা বলেন, এরশাদ ট্রাস্টের যে কমিটি ছিল তার মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও তারা এরিকের সম্পত্তি হ্যান্ডওভার করছে না। এরিক একজন প্রেসিডেন্টের সন্তান। তার বাবা বেঁচে থাকাকালীন সে বিলাসবহুল জীবন যাপন করেছে। বর্তমানে ট্রাস্টের সম্পত্তির টাকা না পাওয়ায় সে আর্থিক সংকটে ভূগতেছে। তার স্বাভাবিক জীবন-যাপন নেই। আজ হিমাগারে গেলে ধাক্কাধাক্কি, গালিগালাজ করাসহ আমার শ্লীলতাহানী করা হয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর ন্যায় বিচার চাই। হিমাগারে ৩০ শতাংশ শেয়ার এরিকের চাচা মুকুলের নামে রয়েছে। সে এরিকের কোন খোঁজ রাখে না। ফোন করলে তিনি ফোন ধরেন না। বলা যায় গায়ের জোরে এরিকের হিমাগার তারা লুটেপুটে খাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এরিকের চাচা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, বিরোধী দলীয় নেতা হলেও কেউ এরিকের খোঁজ-খবর রাখেনি। আমাদের উপর অন্যায়-অত্যাচার হচ্ছে দলের কোন নেতা একবার ফোন করে খবর নেয়নি। তাই এরিক বিষয়টি জাপা চেয়ারম্যানকে জানান নি।
মিঠাপুকুর থানার ওসি মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, এরিক এরশাদ থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি। হিমাগার যারা পরিচালনা করছেন তাদের পক্ষ হতে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।